Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদ ও মুজাহিদদের ঘৃণা করা নিফাকের নির্দশন ! 

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদ ও মুজাহিদদের ঘৃণা করা নিফাকের নির্দশন ! 

    জিহাদ ও মুজাহিদদের ঘৃণা করা নিফাকের নির্দশন !


    শাইখ সুলাইমান আল আলওয়ান
    [ ফাক্কাল্লাহু আসরাহু ]




    একজন ভাই বলছেন, কিছু মানুষ আছে, তারা যখন কোনো ইমামকে কুফফারদের বিরুদ্ধে দুআ করতে দেখেন, তখন তারা তাঁর নিকট গিয়ে বলে ,কুফফারদের বিরুদ্ধে দুআ করবেন না। কারণ আল্লাহ তাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের তাকদীরে এটি (কুফর) রেখেছেন।" হ্যাঁ, এটি এমন এক প্রশ্ন যা প্রায়ই জিজ্ঞাসিত হয়। কিন্তুু পূর্বের দিনগুলোতে এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হত না। কারণ তখন মানুষের ফিতরাত ও দ্বীনে বিশুদ্ধতা ছিল। বরং এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসার কারণ হল দ্বীনে দুর্বলতা এবং ইসলামী শরীয়ার বাইরে কার্য পরিচালনাকারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। তাই তারা হয়ে উঠেছে শয়তানের সাহায্যকারী, এবং কুফর ও কুফরের প্রবক্তাদের রক্ষী এবং মুসলিমদের ছুরি দিয়ে জবাই করে ফেললেও আপনি কখনও তাদেরকে মুসলিমদের পক্ষে কথা বলতে দেখবেন না। আর (মুসলিম) শিশুদের উপরেও ছুরি দিয়ে গনহত্যা চালানো হচ্ছে, অথচ তারা সেই শিশুদের পক্ষে কিছুই বলছে না৷ বরং তারা কুফরের নেতাদের সমর্থক হিসেবেই নিয়োগপ্রাপ্ত। তাই যখন সিরিয়া ও সেখানে চলমান যুদ্ধের প্রসঙ্গ আসে, তারা বলেঃ " সিরিয়ায় কোনো জিহাদ নেই "। যারা বলে সিরিয়ায় কোনো জিহাদ নেই, আপনি তাদের মুখে একটি শব্দও শুনতে পাবেন না। যেখানে তারা ছুরি দিয়ে শিশুদের উপর গনহত্যা চালানো বা রাফিজিদের অপরাধ সমূহ, বা হিজবুশ শয়তানের অপরাধসূমহ বা অনুরূপ ঘটনা প্রতিরোধ করছে৷ অথচ, যখন তারা মুজাহিদদের কোনো ভুল দেখে, তারা সেই ভুল নিয়ে উড়ে বেড়ায় এবং ভুলটিকে অনেক বড় করে দেখায়। আমরা সেক্যুলারদের কথা বলছি না, বরং আমরা দাড়িওয়ালা ব্যক্তিদের কথাই বলছি। যারা নিজেদের মাশায়েখ, উলামা, ত্বলিবুল ইলম বলে দাবি করে, এবং তাদের মাঝে নিফাকের নিদর্শন বিদ্যমান। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ " যে জিহাদ না করে বা জিহাদের ইচ্ছা পোষণ ছাড়াই মৃত্যুবরণ করল,সে নিফাকের একটি শাখার উপর মৃত্যুবরণ করল।" ইমাম মুসলিম কর্তৃক বর্ণিত- সুতরাং যখন জিহাদ না করে বা জিহাদের ইচ্ছা পোষণ ছাড়াই মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি নিফাকের একটি শাখার উপর মৃত্যুবরণ করল। তাহলে তার ব্যাপারে কী বিধান যে মানুষকে জিহাদের পথ হতে দূরে রাখে, মুজাহিদদের দোষ খুঁজে বেড়ায়? তাদের ব্যাপারে গীবত করে ও অপবাদ দেয়? অথচ একটি শব্দও তাকে উচ্চারণ করতে দেখবেন না কুফরের নেতা বা ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে অথবা আল্লাহর শরীয়াহ প্রতিস্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে বরং আপনি দেখবেন সে তাদের মাঝেই তাদের সাহায্যকারীরুপে বিদ্যমান। তাই আপনি তাকে কেবল অন্যদের ব্যাপারেই কথা বলতে দেখবেন এবং কখনই ওই অপরাধীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখবেন না। আবু মুহাম্মদ ইবনে হাজম (রহি) কিতাবুল জিহাদের ভূমিকাতেই বলছেনঃ কুফরের পরে, যারা কুফরের বিরুদ্ধে জিহাদে নিষেধ করে ও মানুষকে কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ হতে বিরত রাখে তাদের গুনাহের চাইতে বড় কোনো গুনাহ নেই।" তিনি বলছেনঃ " কুফরের পর এই ব্যক্তিদের গুনাহের চেয়ে বড় আর কোনো গুনাহ নেই। " এবং কিছু মানুষ এসব ব্যক্তিদের মুনাফিক বলাকে অপছন্দ করে। অথচ নবী (সাঃ) স্বয়ং তাদের মুনাফিক নামকরণ করছেন। এবং নবী (সাঃ) এর যুগে জিহাদ ছিল দুই পথের পার্থক্যকারী চিহ্নঃ কারা ঈমানের পথে ও কারা নিফাকের পথে। আপনি ইমামদের জীবনীতে এই ব্যাপারটি খুঁজে পাবেননা, এমন গ্রন্থ খুবই কম। ' আল-ইসাবাহ ফি তাময়িজ আস-সাহাবাহ' ও উসদুল ঘাবাহ ফি মারিফাতুস সাহাবাহ' গ্রন্থ দেখুন, এবং সাহাবিদের ও তাবিঈনদের অন্যান্য সকল জীবনী গ্রন্থে দেখুন, সব জায়গাতেই ব্যক্তির ব্যাপারে বলা হয়ছেঃ ' সে যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিল বা সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে ছিল।' যুদ্ধ ও জিহাদের অংশগ্রহণের উপর ভিত্তি করে একজন ব্যক্তি তার ঈমান বা নিফাকের জন্য প্রসিদ্ধ হত। এবং তাদের মাঝে নিশ্চিত ভাবেই এটি নিয়ে বলাবলি হত। নবী (সাঃ) যখন কা'ব ও অন্য দুই সাহাবীকে পরিত্যাগ করেছিলেন, সেটি ছিল এই কারণেই। এবং এই বর্ণনার ব্যাপারে আলিমগণ সর্বসম্মত। যখন মুনাফিক ও ( উম্মাহর মাঝে ) বিভাজন সৃষ্টিকারীরা উসমান ( রাদিঃ) কে অপবাদ দিতে এগিয়ে আসলে, তারা তার ব্যাপারে কথা বলছিল কারণ তিনি উহুদের যুদ্ধে অংশ নেননি। যেখানে নবী (সাঃ) নিজেই তাকে আব্যাহিত দিয়েছিলেন কারণ তার কন্যা ( উসমানের স্ত্রী) খুব অসুস্থ ছিলেন। তাই তিনি নিজে উসমানকে রুকাইয়ার সাথে থেকে তার সেবা করার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। তবুও তারা ( মুনাফিকরা) এই পথ দিয়েই প্রবেশ করেছিল কারণ তারা জানত এ বিষয়টি নিফাকের নিদর্শন। উসমান (রাঃ) কে নবী (সাঃ) নিজেই অব্যাহতি দিয়েছেন। এবং এ বিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম ( রাদিআল্লাহু আন'হুম) ও একমত ছিলেন।কিন্তু মুনাফিকরা জানত এই বিষয়টি অন্যের উপর উপনীত হওয়ার একটি পথ, তাই তারা এই বিষয়টিকে ঈমানদার ও মুনাফিকদের পথের পার্থক্যকারী হিসেবে ব্যবহার করত। যদি আপনি জানতে চান একজন মানুষের প্রকৃতপক্ষেই আন্তরিকতা ও ঈমান আছে, নাকি সে মুনাফিক জিহাদের বিধান সমূহের ব্যাপারে তার মত ও জিহাদের সময় হলে সে কী করে সেটা আপনাকে দেখতে হবে। তাহলেই সে আপনার জন্য পরিচিত হয়ে যাবে, অন্য কোনো কিছুরই কোনো প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম ( রাদিআল্লাহু আন'হুম) একমত ছিলেন। এবং এই ইজমার দলিল হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এট হাদীসঃ" যে জিহাদ না করে বা জিহাদের ইচ্ছে পোষণ ছাড়াই মৃত্যুবরণ করল , সে নিফাকের একটি শাখার উপর মৃত্যুবরণ করল"। তাই একজন মানুষের দিকে দেখুন এবং জিহাদ ও মুজাহিদদের ব্যাপারে তার অবস্থা কী দেখুন। এবং তাহলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে সে একজন ঈমানদার নাকি মুনাফিক? কারণ সাহাবীগণ এটিকে ঈমান ও নিফাকের মাঝে পার্থক্যকারী হিসেবে দেখছেন। এবং তাই যখন সাহাবীগণ কোনো ব্যক্তিকে যুদ্ধ থেকে দূরে থাকতে দেখছেন, যতক্ষণ না তার স্বপক্ষে উপযুক্ত অজুহাত প্রতিষ্ঠা হত, তারা তাকে পরিত্যাগ করতেন এবং তার বিরুদ্ধে নিফাকের অভিযোগ করতেন। এজন্যই নবী (সাঃ) ক'ব ও তার অপর দুই সাহাবীকে ৫০ দিনের জন্য পরিত্যাগ করার আদেশ দিয়েছেন। এবং জমিন সুবিশাল হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সংকুচিত হয়ে উঠেছিল। এবং এ বিষয়টি তাদের জন্য এতটাই কঠিন হয়ে গিয়েছিল যে কা'ব রাঃ নিজ ঘরে সালাত আদায় করতেন। কেউ তার সাথে কথাই বলতেন না। কখনও তিনি মসজিদে সালাত আদায় করতেন এবং নবী(সাঃ) কে সালাম দিতেন। এবং তিনি নবী (সাঃ) এর দিকে তাকিয়ে চিন্তা করতেন নবী(সাঃ) তার সালামের জবাব দিবেন কিনা। এতকিছু কারণ তারা তাবুকের যুদ্ধে অংশ নেননি। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাদের বিচার না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের পরিত্যাগ করতে আল্লাহ আদেশ দেন। এবং এটি বিবেচনা করা প্রয়োজন, তারা কি মুনাফিক। নাকি তারা ঈমানদার যারা তাওবা করছেন? সুতরাং নবী(সাঃ) এই নিদর্শনকে ঈমান ও নিফাকের মাঝে পার্থক্যকারী করছেন।
    Last edited by tahsin muhammad; 03-08-2023, 08:56 PM.

  • #2

    الَّذينَ يَلمِزونَ المُطَّوِّعينَ مِنَ المُؤمِنينَ فِى الصَّدَقٰتِ وَالَّذينَ لا يَجِدونَ إِلّا جُهدَهُم فَيَسخَرونَ مِنهُم ۙ سَخِرَ اللَّهُ مِنهُم وَلَهُم عَذابٌ أَليمٌ

    [79] সে সমস্ত লোক যারা ভৎর্সনা-বিদ্রূপ করে সেসব মুসলমানদের প্রতি যারা মন খুলে দান-খয়রাত করে এবং তাদের প্রতি যাদের কিছুই নেই শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমলব্দ বস্তু ছাড়া। অতঃপর তাদের প্রতি ঠাট্টা করে। আল্লাহ তাদের প্রতি ঠাট্টা করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব
    পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তায়ালা আমাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন।

      Comment

      Working...
      X